• বয়লার সম্পর্কে অজানা সকল কিছু

     

    বয়লার



    ভুমিকা:

    বয়লার অনেক শিল্পে একটি প্রধান জিনিস। টেক্সটাইল শিল্পে, বয়লার উত্পাদন প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য। একটি বয়লার দুর্ঘটনা সমগ্র উথপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পারে। এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে বয়লারে বর্ধিত পর্যবেক্ষণ অপরিহার্য। এই অধ্যায়ে বয়লার কী এবং তারা কীভাবে কাজ করে, প্রকারভেদ এবং শিল্পক্ষেত্রে তাদের গুরুত্ব তার সবকিছুই আলোচনা করা হয়েছে।


    বয়লার (Boiler):

    বয়লারকে স্টীম জেনারেটর বলা হয় । ইহা এমন একটি বদ্ধ পাত্র বিশেষ যাহাতে পানি কে তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে ষ্টীমে রূপান্তর করা হয় । যে আবদ্ধ পাত্রে পানি রেখে তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বাষ্প তৈরি করা হয় তাকে বয়লার বা স্টীম জেনারেটর বলে।

    বয়লার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়, যেমনঃ

    ·         আবাসিক বা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য গরম পানি প্রস্তুত করতে,

    ·         ষ্টীম ইঞ্জিন বা টারবাইনে শক্তি উৎপাদন করতে,

    ·         টেক্সটাইল শিল্পে সাইজিং এবং ব্লিচিংয়ের জন্য,

    ·         বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে,

    ·         চিনির কারখানায়, কেমিক্যাল শিল্পে, সুতার মিলে ইত্যাদি।

    বয়লার-এর শ্রেণী বিভাগ (Classification of Boiler):

    টিউবের প্রবাহী অনুসারে -

    ১। ফায়ার টিউব বয়লার।

    ২। ওয়াটার টিউব বয়লার।

    চুল্লির ধরন অনুসারে -

    ১। ইন্টারনালী ফায়ার্ড বয়লার।

    ২। এক্সটারনালী ফায়ার্ড বয়লার ।

    অক্ষের (Axis) অবস্থান অনুসারে -

    ১। ভার্টিক্যাল বয়লার

    ২। হরাইজন্টাল বয়লার

    টিউবের সংখ্যা অনুসারে -

    1. single tube boilers

    2. Multi tube boilers

    ব্যবহার অনুসারে -

    ১। ষ্টেশনারী বয়লার

    ২। মোবাইল বয়লার

    ২। ব্যবকক এন্ড উইলকক বয়লার

    ৩। মেরিন স্কচ বয়লার

    ৪। লোকোমেটিভ বয়লার

    ফায়ার টিউব বয়লার:

    কম্বাশন চেম্বারে তৈরি হওয়া ফ্লেম ও গ্যাস টিউবের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা চারপাশের পানিকে গরম করে। টিউবের ওয়ালের মধ্য দিয়ে তাপ সঞ্চালিত হয়ে পানিতে আসে। উদাহরণঃ কোকরান বয়লার, লোকোমোটিভ বয়লার, ভেলকন বয়লার ইত্যাদি।

    সুবিধাঃ

    ·         অপারেটিং খরচ কম।

    ·         ফিড ওয়াটার এর পরিশোধন দরকার নেই।

    ·         বিস্ফোরণের সম্ভাবনা কম।

     

    অসুবিধাঃ

    ·         কর্মদক্ষতা কম (৭৫% পর্যন্ত)

    ·         বড় প্ল্যান্ট এর জন্য উপযুক্ত না

    ·         ষ্টীম তৈরির হার তুলনামূলক কম (ঘণ্টায় ৯টন পর্যন্ত)

    ·         তৈরিকৃত ষ্টীমের চাপ তুলনামূলক কম (২৪.৫বার পর্যন্ত)

    ওয়াটার টিউব বয়লার:

    পানি টিউবের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই টিউবগুলো কম্বাশনের ফলে উৎপন্ন শিখা ও গ্যাস দ্বারা ঘেরা থাকে।উদাহরণঃ ব্যাবকক ও উইলকক্স বয়লার, লা মন্ট বয়লার, বেন্সন বয়লার ইত্যাদি

    সুবিধা:

    ·         কর্মদক্ষতা বেশি (৯০% পর্যন্ত)।

    ·         বড় প্ল্যান্ট এর জন্য উপযুক্ত।

    ·         ষ্টীম তৈরির হার তুলনামূলক বেশি (ঘণ্টায় ৪৫০টন পর্যন্ত)।

    ·         তৈরিকৃত ষ্টীমের চাপ তুলনামূলক বেশি (১৬৫বার পর্যন্ত)।

    অসুবিধা:

    ·         অপারেটিং খরচ বেশি।

    ·         ফিড ওয়াটার এর পরিশোধন দরকার আছে।

    ·         বিস্ফোরণের সম্ভাবনা বেশি।

    বয়লার মাউন্টিং এবং বয়লার এক্সেসরিজ সম্পর্কে আলোচনা (Discuss Boiler Mountings and Boiler Accessories):

    বয়লারের কম্পনেন্টসমূহ:

    শেল- বাঁকানো ষ্টীল প্লেট ব্যবহার করে, রিভেট বা ওয়েল্ডিং এর মাধ্যমে সিলিন্ডার তৈরি করা হয়। সিলিন্ডারের ২পাশে এন্ড প্লেট থাকে।

    বার্নার- এখানে, বাতাসের সাথে ফুয়েল মিশ্রিত হয়। ফুয়েল হিসাবে প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল, কয়লা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।

    কম্বাশন চেম্বার/ফায়ার বক্স/ফার্নেস- কম্বাশনের ফলে উৎপন্ন তাপে হিট এক্সচেঞ্জার গরম হতে থাকে।

    হিট এক্সচেঞ্জার- এর মাধ্যমে বার্নারের সাথে পানির সরাসরি সংযোগ ছাড়াই পানিতে তাপ সরবারহ করা হয়।

    সাপ্লাই লাইন- এই পাইপগুলোর মাধ্যমে গরম পানি বা ষ্টীম ডিস্ট্রিবিউশন পয়েন্টগুলোতে সরবারহ করা হয়।

    রিটার্ন লাইন- যখন পানি ঠাণ্ডা হয়ে যায় অথবা ষ্টীম ঠাণ্ডা হয়ে পানিতে রূপান্তরিত হয়, তখন রিটার্ন লাইন রিহিটের জন্য তাদের বয়লারে নিয়ে যায়।

    গ্রেট- এটি ফার্নেসের প্ল্যাটফর্ম, যার উপর ফুয়েল পোড়ানো হয়। এটি কাস্ট আইরনের দণ্ড পৃথক পৃথক করে রেখে প্রস্তুত করা হয়, যেন পর্যাপ্ত বায়ু তাদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

    অ্যাঁশ পিট- এখানে, ছাই জমা হয়। ছাইগুলি আগুনের নিচে রাখা বাক্সে পড়ে।

    বয়লার মাউন্টিং:

    যেসব যন্ত্র ব্যতীত বয়লার উহার কার্য নিরাপদে সম্পাদন করতে পারে না উহাকে বয়লার মাউন্টিং বলে। কতগুলি বয়লার মাউন্টিং নিম্নরূপ-

    ১। ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর

    ২। প্রেসার গেজ

    ৩। সেফটি ভালভ

    ৪। ফিউজিবল প্লাগ

    ৫। ফিড চেক ভালব

    ৬। ব্লো অব কর্ক

    ৭। স্টপ ভালব।

    বয়লার মাউন্টিং এর কাজ:

    বয়লার মাউন্টিং এর কাজ নিম্নে দেওয়া হল:

    ১। পানি পরিমাপক যন্ত্রের সাহায্যে পানির মাত্রা পরিমাপ করা।

    ২। প্রেশার গেজের সাহায্যে বাষ্পের চাপ পরিমাপ করা ।

    ৩। সেফটি ভালবের সাহায্যে অতিরিক্ত বাষ্পের চাপ বের করে দিয়ে ধ্বংসের হাত থেকে বয়লারকে রক্ষা করা।

    ৪। ব্লো অব কর্কের সাহায্যে বয়লারের তলদেশে সঞ্চিত কাদামাটি স্কেল ইত্যাদি অপসারণ করা।

    ৫। বয়লারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

    সেইফটি ভালভ:

    বয়লারের মধ্যে স্টিমের (বাষ্প) অতিরিক্ত চাপকে যে ভাল্বের মাধ্যমে বের করা হয়, তাকে সেইফটি ভাল্ব বলে।

    সেইফটি ভালভ ব্যবহার:

    এটি অটোমেটিক বা সয়ংক্রিয় উপায়ে অতিরিক্ত চাপকে বের করে দিতে পারে ও বয়লারকে নিরাপদ সীমার মধ্যে কার্যকর রাখতে পারে। একটি বয়লারে দুইটি সেইফটি ভাল্ব রাখা হয় যাতে একটি নষ্ট হয়ে গেলে অন্যটি দিয়ে কাজ চালানো যায়।

    বয়লার এক্সেসরিজ:

    যেসব যন্ত্রপাতি বয়লারের সঠিক পরিচালনার এবং কাৰ্যদক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে উহাদিগকে বয়লার এক্সেসরিজ বলে। যেমন-

    ১। ইকোনোমাইজার

    ২। ফিড ওয়াটার হিটার

    ৩। সুপার হিটার

    ৪। স্টীম সেপারেটর

    ৫। রি হিটার

    ৬। ষ্টীম ইনজেকটর

    ৭। ষ্টীম কনডেনসার ইত্যাদি।

     

    বয়লার এক্সেসরিজের কাজ:

    বয়লার এক্সেসরিজের কাজ নিম্নে দেওয়া হল:

    ১। ফিড পাম্পের সাহায্যে বয়লারে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা।

    ২। বয়লার হতে প্রাপ্ত আর্দ্র বাম্পকে সুপার হিটারের সাহায্যে পুনরায় তাপ দিয়ে পূর্ণ বাষ্পে পরিনত করা।

    ৩। চিমনী দিয়ে বের হওয়া উত্তপ্ত ফু গ্যাসের তাপকে ইকোনোমাইজার ব্যবহার করে কাজে লাগানাে।

    ৪। ষ্টীমের এক্সপানশন রেশিও বৃদ্ধি করা।

    ৫। পরিত্যক্ত বাষ্পকে ষ্টীম কন্ডেনসারের মাধ্যমে শীতল করে পানিতে পরিনত করে বয়লারে ব্যবহার করা।

    ৬। ষ্টীমের ব্যাক প্রেশার কমিয়ে দেয়া।

     

    ইকোনোমাইজার:

    ইকোনোমাইজার মূলত পরিতাক্ত ফ্লু গ্যাসের তাপকে কাজে লাগিয়ে ফিড ওয়াটার কে উত্তপ্ত করতে ব্যবহার করা হয়।

    ইকোনোমাইজার এর কার্যাবলি:

    ইকোনোমাইজার একপ্রকার ফিড ওয়াটার হিটার, যার সাহায্যে গরম ধোঁয়ার (Flue gas) তাপের সংস্পর্শে ফিড ওয়াটারকে প্রাথমিকভাবে কিছুটা গরম করে বয়লার ড্রামে সরবরাহ করা হয়। কারণ বয়লার ড্রামে ঠান্ডা পানি অপেক্ষা উত্তপ্ত পানি সরবরাহ করলে বয়লারের কার্যদক্ষতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়।

    ইকোনোমাইজার ফিড ওয়াটার পাম্প ও বয়লার ড্রামের পাইপের সাথে সংযুক্ত থাকে। বয়লারে পানি সরাসরি না গিয়ে ইকোনোমাইজারের পাইপের মধ্য দিয়ে ঘুরিয়ে বয়লার ড্রামে পাঠানো হয়। ফার্নেসের গরম ধোঁয়া চিমনি দিয়ে বের হওয়ার আগে ইকোনোমাইজারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। উক্ত গরম ধোঁয়া ইকোনোমাইজারের পাইপের ভিতরের ঠান্ডা পানিকে প্রাথমিক অবস্থায় কিছুটা উত্তপ্ত করে দেয়। এরপর উক্ত পানি বয়লার ড্রামে প্রবেশ করে। ফলে বয়লারের পানি তাড়াতাড়ি বাষ্পে পরিণত হতে পারে। এতে বয়লারের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে যায়। হিটিং ক্যাপাসিটি বাড়ানোর জন্য ইকোনোমাইজারের টিউব পরিষ্কার করে দিতে হয়। নতুবা ময়লা জমে আস্তরের সৃষ্টি হবে এবং আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।

    ইকোনোমাইজার ব্যবহারের সুবিধা:

              বয়লারের ষ্টীম উথপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

              ১৫% থেকে ২০% জ্বালানি ব্যবহার কমে যায়।

              বয়লারের টিউবে স্কেল তৈরি হতে পারে না।

    বয়লার এর কার্যনীতি এর বর্ণনা (Describe Working Principle of Boiler):

    বয়লার হল একটি বদ্ধ পাত্র যাতে পানিতে তাপ সরবরাহ করে পানিকে বাষ্পে পরিণত করা হয়। চুল্লিতে জ্বালানী পোড়ানোর মাধ্যমে গরম গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই গরম গ্যাসগুলি পানির পাত্রের সংস্পর্শে নেয়া হয় যেখানে পানি এবং বাষ্পের মধ্যে তাপ স্থানান্তর ঘটে। অতএব, বয়লারের মূল নীতি হল তাপ শক্তি ব্যবহার করে পানিকে বাষ্পে রূপান্তর করা। বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের বয়লার ব্যবহার করা হয়।

    প্রকৃতপক্ষে বয়লারের ভেতর প্রধান দুটি চেম্বার থাকে যার একটিতে থাকে তাপশক্তি বা আগুন আর অন্যটিতে পানি বা অন্য কোন তরল পদার্থ । আগুনের তাপে পানি ফোটানো হয় । আগুন জ্বালানো তথা তাপশক্তি উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হয় কাঠ, কয়লা, তৈল, গ্যাস, নিউক্লিয়ার জ্বালানি, সূর্যালোক ইত্যাদি ।

    কয়লা চালিত বয়লারের কার্যনীতি:

    বাতাসের অক্সিজেনের সাহায্যে কয়লা বা অন্যান্য জ্বালানি পোড়ানো হয় । বয়লার ফার্নেস বা চুল্লিতে মোটর অথবা ইন্জিন চালিত ব্লোয়ার দিয়ে বাতাস সরবরাহ করা হয় । এতে আগুনের উত্তাপ বৃদ্ধি পায় । ফার্নেসকে ফায়ার ড্রাম বা কম্বাশন চেম্বারও বলা হয়। ফায়ার ড্রামের সাথে একই ধাতুর তৈরি অনেকগুলো টিউব লাগানো থাকে যেগুলি বাহিরের চিমনির সাথে যুক্ত । পানি বা তরল এই ফায়ার ড্রাম ও টিউবের বাহিরে চারিপার্শে থাকে এবং টিউবের ভেতরের গরম পোড়া গ্যাস হতে তাপ গ্রহণ করে পরিচলন প্রক্রিয়ায় উত্তপ্ত হয়ে বাষ্পীভূত হয় । উৎপন্ন বাষ্প বায়লারের উপরে স্থাপিত একটি পাইপ দিয়ে বেরিয়ে যায় । বয়লারে পানি সর্বরাহ করা হয় উচ্চচাপে মাল্টিস্টেজ সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের সাহায্যে। এ ধরণের বয়লারকে ফায়ার টিউব বয়লার বলা হয় কারণ এ বয়লারে টিউব ও ড্রামের ভেতর আগুন থাকে, বাহিরে পানি থাকে । যে ধরণের বয়লারে টিউবের ভেতর পানি ও বাহিরে আগুন থাকে তাকে ওয়াটার টিউব বয়লার বলে । কাঠ-কয়লা দিয়ে বয়লার চালানো খুবই কষ্টকর কাজ । এর চুল্লিতে কয়লা সরবরাহ করা বেশ কঠিন কাজ, খুব উত্তাপ সহ্য করতে হয় । আধুনিক বয়লার খুব স্মার্ট, একটা সুইচ টিপলেই চলে। কিছু বয়লার কম্পিউটার টাচস্ক্রিন দ্বারা চালনা করা হয় । টাচ করলেই আগুন জ্বলে, চাহিদা অনুযায়ী অটোমেটিক আগুনের উত্তাপ নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রয়োজনের সময় বয়লার নিজে নিজেই পানি নিতে পারে। অপারেটরকে কোন কাজ করতে হয়না। বয়লারের গায়ে হিট ইন্সুলেশন থাকায় রুম টেম্পারেচার ও ঠিক থাকে ।

    বয়লার ব্লো-ডাউন ও বয়লার স্কেলিং এর বর্ণনা (Explain Boiler Blow Down and Boiler Scaling):

    বয়লার ব্লো-ডাউন পদ্ধতি (Blow Down Process):

    ব্লোডাউন ভাল্ভ ব্যবহারের মাধ্যমে বয়লার এর ড্রামের নিচে জমাকৃত তলানি বের করার পদ্ধতিকেই বয়লার ব্লো-ডাউন পদ্ধতি বলে।

    বয়লারের অভ্যন্তরের পানির বিভিন্ন প্যারামিটার নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য ব্লোডাউন ভাল্ব এর মাধ্যমে নিয়মিত ব্লো-ডাউন করতে হয়, অন্যথায় বয়লারের টিউব ও প্লেটে স্কেল জমে বয়লারে তাপ সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করে। বয়লারে স্কেল জমলে বাষ্প উৎপাদন কমে যাবে জ্বালানী ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে এবং প্লেট, টিউব ইত্যাদি ক্ষয় হয়ে বয়লারের আযুষ্কাল কমে যাবে।


    বিশেষ করে স্কেল হ্রাস করা, কোরোশন কমানো, ক্যারিওভার না হওয়ার জন্য নিয়মিত বয়লার নির্মাতার নির্দেশনা মোতাবেক অথবা বয়লার ওয়াটার পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ব্লো-ডাউন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়াও বয়লার ওয়াটারের পিএইচ বেড়ে গেলে ব্লো-ডাউন করে পিএইচ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

    একটি বয়লার ব্যবহার করার সময়, পানি বাষ্পে পরিণত হয়, এবং যদি পানিতে কোন অপদ্রব্য বা কঠিন পদার্থ থাকে তবে সেগুলি বয়লার ট্যাঙ্কের ভিতরে জমা হয়। সময়ের সাথে সাথে, এই অপদ্রব্য বা কঠিন পদার্থ তলানি হিসেবে বয়লারে জমা হতে থাকে। বয়লার ব্লোডাউন প্রক্রিয়ায় উচ্চ চাপে বয়লার মধ্যে জোরপূর্বক নিষ্কাশন করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি বয়লারের পানিতে দ্রবীভূত কঠিন পদার্থের ঘনত্বকে নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে৷ ব্লোডাউন পদ্ধতির ফ্রিকোয়েন্সি এবং সময়কাল বয়লারের ধরন, মেকআপ পানির পরিমাণ এবং গুণমান, অপারেটিং চাপ এবং পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতির মতো কারণগুলির দ্বারা প্রভাবিত হয়৷

    বয়লার স্কেলিং (Boiler Scaling):

    টিউব বয়লারে ব্যবহৃত পানিতে বিভিন্ন ধরনের হেভি-ম্যাটেরিয়ালস দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে যেমন (আয়রন, ক্যালসিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লেড, সোডিয়াম ইত্যাদি)। আমরা যে তাপমাত্রায় পানিকে তাপ দিয়ে বাষ্প তৈরি করি ওই তাপমাত্রায় এ সকল হেভি-ম্যাটেরিয়ালস বাষ্পীভূত করা সম্ভব নয়। সেজন্য এই সকল হেভি-ম্যাটেরিয়ালস ক্রমান্নয়ে বয়লারের টিউবের উপর একধরনের স্তর সৃষ্টি করে যাকে আমরা স্কেল বলে থাকি, স্কেল দেখতে কালো, সাদা, ধূসর ইত্যাদি বর্ণের হয়ে থাকে। এ সকল স্কেল আস্তে আস্তে বয়লারের টিউবে ক্ষত সৃষ্টি করে এবং একপর্যায়ে বয়লারের টিউব নষ্ট করে দেয়। বয়লারের টিউবে এ ধরনের স্তর সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে বয়লার স্কেলিং বলে।

    কিছু সাধারণ ফিড ওয়াটার দূষক যা স্কেলিং সৃষ্টি করেঃ

     

    ·         সিলিকা

    ·         আয়রন

    ·         ক্যালসিয়াম

    ·         ম্যাগনেসিয়াম

    ·         অ্যালুমিনিয়াম

     

    ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট:

    বয়লারে পানি দেয়ার পূর্বে এর থেকে অপদ্রব্য দূর করে পানিকে পরিশোধন করা হয়, এ প্রক্রিয়াকে ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট বলে।

    ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্টের উদ্দেশঃ

    ·         পানিকে উত্তপ্ত করার ফলে জ্বালানি সাশ্রয় হয়।

    ·         বয়লারের ধাতব অংশ ক্ষয়কারী পদার্থ পানিতে দ্রবীভূত হয়ে গ্যাস হিসেবে দূর হয়।

    ·         স্কেল উথপন্নকারী লবনসমূহকে বয়লারে প্রবেশের পূর্বেই ওয়াটার থেকে পৃথক করা।

    বয়লার দক্ষতা (Discuss Boiler Efficiency):

    ইনপুট আউটপুট পদ্ধতি (প্রত্যক্ষ পদ্ধতি)

     

    বয়লার দক্ষতা পরিমাপের জন্য প্রত্যক্ষ পদ্ধতি বেশি ব্যবহারযোগ্য বা অধিক সাধারণ।

     

    বয়লার দক্ষতা = প্রাপ্ত ক্ষমতা / প্রয়োগকৃত ক্ষমতা = (Q * (Hg - Hf)) / (q * GCV) * 100%

     

    Q = প্রতি ঘণ্টাইয় বাষ্প প্রবাহের হার - kg/hr

     

    Hg = প্রতি কেজি সম্পৃক্ত বাষ্পে এনথালপি - kcal/kg

     

    Hf = প্রতি কেজি ফিড জলের এনথালপি- kcal/kg

     

    q = প্রতি ঘণ্টায় জ্বালানী ব্যবহারের হার - kg/hr

     

    GCV = কেজিতে মোট ক্যালোরিফিক মান kcal/kg

     

     

    বয়লার এর প্রয়োগক্ষেত্র (Mention the Utility of Boiler):

     

    বয়লার এর বিভিন্ন শিল্পে খুব বিস্তৃত অবদান রয়েছে:

     

    ·         খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প

    ·         তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

    ·         রাসায়নিক শিল্প

    ·         শোধনাগার এবং ডিস্টিলারি

    ·         চিনি কারখানা

    ·         টেক্সটাইল শিল্প

    ·         স্বাস্থ্যসেবা শিল্প

    ·         কাগজ শিল্প

    ·         ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প

    ·         FMCG (ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস)

    বয়লার নিরাপত্তার জন্য কিছু নিরদেশাবলি:

    ·        ১।  গ্যাসের  চাপ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ঠিকমত চেক করা।

    ·        ২। বয়লার চালুর পূর্বে ফিড ওয়াটার সফট আছে কিনা তা পরিক্ষা করা।

    ·       ৩।  বয়লারের ভিতরে বাতাস ক্লিয়ার করা।

    ·        ৪। পর্যাপ্ত ষ্টীম হলে তার বেবস্থা নেয়া।

    ·        ৫। পানি ও গ্যাস ঠিকমত আছে কিনা তা পরীক্ষা করা।

    ·         ৬। অস্বাভাবিক শব্দ হলে তার উথস খুজে বের করা।

    ·        ৭। বয়লারের সেইফটি বাল্ব প্রতিমাসে একবার চেক করা।

    ·         ৮। ওয়াটার লেভেল কন্ট্রোলার প্রতিমাসে একবার খুলে পরিস্কার করা

    ·        ৯। বয়লারের ভিতর স্কেল পরীক্ষা করা ও তা পরিস্কার করা

    ১০। প্রতি ৬ মাস পর পর টিউব ও কম্প্রেসর পরিস্কার করা, ইত্যাদি।

     

    ১। বয়লার কাকে বলে?

    উত্তরঃ যে আবদ্ধ পাত্রে পানি রেখে তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বাষ্প তৈরি করা হয় তাকে বয়লার বা স্টীম জেনারেটর বলে।

    ২। বয়লারের মাউন্টিংস কি?

    উত্তরঃ যেসব যন্ত্র ব্যতীত বয়লার উহার কার্য নিরাপদে সম্পাদন করতে পারে না উহাকে বয়লার মাউন্টিং বলে।

    ৩। বয়লারের পাঁচটি মাউন্টিংসের নাম লিখ।

    উত্তরঃ ১। ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর

    ২। প্রেসার গেজ

    ৩। সেফটি ভালভ

    ৪। ফিউজিবল প্লাগ

    ৫। ফিড চেক ভালব

    ৪। বয়লারের এক্সেসরিজ কি?

    উত্তরঃ যেসব যন্ত্রপাতি বয়লারের সঠিক পরিচালনার এবং কাৰ্যদক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে উহাদিগকে বয়লার এক্সেসরিজ বলে।

    ৫। বয়লারের পাঁচটি এ্যাকসোসরিজের নাম লিখ।

    উত্তরঃ ১। ইকোনোমাইজার

    ২। ফিড ওয়াটার হিটার

    ৩। সুপার হিটার

    ৪। স্টীম সেপারেটর

    ৫। রি হিটার

    ৬। বয়লার এর পাঁচটি প্রয়োগক্ষেত্র লিখ।

    উত্তরঃ •খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প

            তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

              রাসায়নিক শিল্প

              শোধনাগার এবং ডিস্টিলারি

              চিনি কারখানা

    ৭। ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর কেন ব্যবহার করা হয়?

    উত্তরঃ বয়লারের ভেতরের পানির লেভেল বাইরে থেকে দেখার জন্য ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা হয়।

    ৮। সাধারণত প্রতি বয়লারে কয়টি ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর থাকে?

    উত্তরঃ সাধারণত প্রতি বয়লারে দুটি ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর থাকে, যাতে একটি নষ্ট হয়ে গেলেও অপরটি দিয়ে সাময়িকভাবে কাজ চলতে পারে।

    ৯। চাপমান যন্ত্র বা প্রেসার গেজ (Pressure gauge) কেন ব্যবহার করা হয়?

    উত্তরঃ বয়লার কত চাপে স্টিম বা বাষ্প উৎপাদন করছে তা জানার জন্য বয়লারে শেলের উপরে সম্মুখভাগে প্রেসার গেজ সংযুক্ত থাকে।

    ১০। বয়লারের সেফটি ভালভের কাজ কী?

    উত্তরঃ এটি বয়লারে উৎপন্ন অতিরিক্ত বাষ্পের চাপ বের করে দিয়ে বয়লারকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে।

    ১১। স্টিম স্টপ ভালভ বলতে কী বুঝায়?

    উত্তরঃ যে ভালভ টারবাইন বা দুই পাইপের মাঝে স্থাপন করে স্টিমের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তখন একে স্টিম স্টপ ভালভ বলা হয়।

    ১২। ইকোনোমাইজার বলতে কী বুঝায়?

    উত্তরঃ ইকোনোমাইজার একপ্রকার ফিড ওয়াটার হিটার, যার সাহায্যে গরম ধোঁয়ার (Flue gas) তাপের সংস্পর্শে ফিড ওয়াটারকে প্রাথমিকভাবে কিছুটা গরম করে বয়লার ড্রামে সরবরাহ করে।

    ১৩। বয়লার ড্রাফট কী?

    উত্তরঃ বয়লার ফার্নেসে উত্তপ্ত গ্যাসের চাপ ও বাইরের (বায়ুমণ্ডলে) বাতাসের চাপের পার্থক্যকে বয়লার ড্রাফট (Boiler draft) বলে।

    ১৪। বয়লার ড্রাফটের কাজ কী?

    উত্তরঃ বয়লার ড্রাফটের কাজগুলো হলোঃ

    ১। চুল্লির মধ্যে জ্বালানির পূর্ণদহনের জন্য প্রয়োজনীয় বাতাস তথা অক্সিজেন সরবরাহ করা,

    ২। চুল্লির মধ্যস্থিত পোড়া গ্যাসকে চুল্লি হতে চিমনি পথে বের করে দেওয়া।

     

    ১। বয়লার মাউন্টিংস কী কাজে ব্যবহৃত হয়?

    উত্তরঃ বয়লার মাউন্টিং এর কাজ নিম্নে দেওয়া হল:

    ১। পানি পরিমাপক যন্ত্রের সাহায্যে পানির মাত্রা পরিমাপ করা।

    ২। প্রেশার গেজের সাহায্যে বাষ্পের চাপ পরিমাপ করা ।

    ৩। সেফটি ভালবের সাহায্যে অতিরিক্ত বাষ্পের চাপ বের করে দিয়ে ধ্বংসের হাত থেকে বয়লারকে রক্ষা করা।

    ৪। ব্লো অব কর্কের সাহায্যে বয়লারের তলদেশে সঞ্চিত কাদামাটি স্কেল ইত্যাদি অপসারণ করা।

    ৫। বয়লারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

    ২। বয়লার এক্সেসরিজের কাজ কী?

    উত্তরঃ বয়লার এক্সেসরিজের কাজ নিম্নে দেওয়া হল:

    ১। ফিড পাম্পের সাহায্যে বয়লারে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা।

    ২। বয়লার হতে প্রাপ্ত আর্দ্র বাম্পকে সুপার হিটারের সাহায্যে পুনরায় তাপ দিয়ে পূর্ণ বাষ্পে পরিনত করা।

    ৩। চিমনী দিয়ে বের হওয়া উত্তপ্ত ফু গ্যাসের তাপকে ইকোনোমাইজার ব্যবহার করে কাজে লাগানাে।

    ৪। ষ্টীমের এক্সপানশন রেশিও বৃদ্ধি করা।

    ৫। পরিত্যক্ত বাষ্পকে ষ্টীম কন্ডেনসারের মাধ্যমে শীতল করে পানিতে পরিনত করে বয়লারে ব্যবহার করা।

    ৬। ষ্টীমের ব্যাক প্রেশার কমিয়ে দেয়া।

    ৩। বয়লার বিভিন্ন ব্যবহার উল্লেখ কর।

    উত্তরঃ বয়লার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়, যেমনঃ

              আবাসিক বা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য গরম পানি প্রস্তুত করতে,

              ষ্টীম ইঞ্জিন বা টারবাইনে শক্তি উৎপাদন করতে,

              টেক্সটাইল শিল্পে সাইজিং এবং ব্লিচিংয়ের জন্য,

              বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে,

              চিনির কারখানায়, কেমিক্যাল শিল্পে, সুতার মিলে ইত্যাদি।

    ৪। বয়লার ব্লো-ডাউন পদ্ধতি কী?

    উত্তরঃ একটি বয়লার ব্যবহার করার সময়, পানি বাষ্পে পরিণত হয়, এবং যদি পানিতে কোন অপদ্রব্য বা কঠিন পদার্থ থাকে তবে সেগুলি বয়লার ট্যাঙ্কের ভিতরে জমা হয়। সময়ের সাথে সাথে, এই অপদ্রব্য বা কঠিন পদার্থ তলানি হিসেবে বয়লারে জমা হতে থাকে। ব্লোডাউন ভাল্ভ ব্যবহারের মাধ্যমে বয়লার এর ড্রামের নিচে জমাকৃত তলানি বের করার পদ্ধতিকেই বয়লার ব্লো-ডাউন পদ্ধতি বলে।

    ৫। বয়লার স্কেলিং বলতে কী বুঝো?

    উত্তরঃ বয়লারের টিউবের উপর বিভিন্ন ধরনের হেভি-ম্যাটেরিয়ালস এর একধরনের স্তর সৃষ্টি করে যাকে আমরা স্কেল বলে থাকি। এ সকল স্কেল আস্তে আস্তে বয়লারের টিউবে ক্ষত সৃষ্টি করে এবং একপর্যায়ে বয়লারের টিউব নষ্ট করে দেয়। বয়লারের টিউবে এ ধরনের স্তর সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে বয়লার স্কেলিং বলে।

    ৬। ইকোনোমাইজার ব্যবহারের সুবিধা লেখ।

    উত্তরঃ ইকোনোমাইজার ব্যবহারে নিম্নের সুবিধা পাওয়া যায় :

    ·         এটি ব্যবহারে 5% হতে 10% জ্বালানি খরচ কম হয়।

    ·         বয়লারের দক্ষতা 10% হতে 20% বৃদ্ধি করে।

    ·         গরম ধোঁয়া তাপীয় দক্ষতা বৃদ্ধি করে।

    ·         এটি নির্মাণ ও মেরামত খরচ অপেক্ষা লাভ বেশি।

    ৭। ইকোনোমাইজার এর কার্যাবলি বর্ণনা কর।

    উত্তরঃ ইকোনোমাইজার একপ্রকার ফিড ওয়াটার হিটার, যার সাহায্যে গরম ধোঁয়ার (Flue gas) তাপের সংস্পর্শে ফিড ওয়াটারকে প্রাথমিকভাবে কিছুটা গরম করে বয়লার ড্রামে সরবরাহ করা হয়। কারণ বয়লার ড্রামে ঠান্ডা পানি অপেক্ষা উত্তপ্ত পানি সরবরাহ করলে বয়লারের কার্যদক্ষতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়।

    ইকোনোমাইজার ফিড ওয়াটার পাম্প ও বয়লার ড্রামের পাইপের সাথে সংযুক্ত থাকে। বয়লারে পানি সরাসরি না গিয়ে ইকোনোমাইজারের পাইপের মধ্য দিয়ে ঘুরিয়ে বয়লার ড্রামে পাঠানো হয়। ফার্নেসের গরম ধোঁয়া চিমনি দিয়ে বের হওয়ার আগে ইকোনোমাইজারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। উক্ত গরম ধোঁয়া ইকোনোমাইজারের পাইপের ভিতরের ঠান্ডা পানিকে প্রাথমিক অবস্থায় কিছুটা উত্তপ্ত করে দেয়। এরপর উক্ত পানি বয়লার ড্রামে প্রবেশ করে। ফলে বয়লারের পানি তাড়াতাড়ি বাষ্পে পরিণত হতে পারে। এতে বয়লারের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে যায়। হিটিং ক্যাপাসিটি বাড়ানোর জন্য ইকোনোমাইজারের টিউব পরিষ্কার করে দিতে হয়। নতুবা ময়লা জমে আস্তরের সৃষ্টি হবে এবং আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।

     

    ৭। বয়লার নিরাপত্তার জন্য কিছু নিরদেশাবলি উল্লেখ কর।

    উত্তরঃ বয়লার নিরাপত্তার জন্য কিছু নিরদেশাবলিঃ

              গ্যাসের চাপ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ঠিকমত চেক করা।

              বয়লার চালুর পূর্বে ফিড ওয়াটার সফট আছে কিনা তা পরিক্ষা করা।

              বয়লারের ভিতরে বাতাস ক্লিয়ার করা।

              পর্যাপ্ত ষ্টীম হলে তার বেবস্থা নেয়া।

              পানি ও গ্যাস ঠিকমত আছে কিনা তা পরীক্ষা করা।

              অস্বাভাবিক শব্দ হলে তার উথস খুজে বের করা।

              বয়লারের সেইফটি বাল্ব প্রতিমাসে একবার চেক করা।

              ওয়াটার লেভেল কন্ট্রোলার প্রতিমাসে একবার খুলে পরিস্কার করা

              বয়লারের ভিতর স্কেল পরীক্ষা করা ও তা পরিস্কার করা।

              প্রতি ৬ মাস পর পর টিউব ও কম্প্রেসর পরিস্কার করা।

    ৮। ওয়াটার টিউব এবং ফায়ার টিউব বয়লারের মধ্যে পার্থক্য লিখ।

    উত্তরঃ ওয়াটার টিউব বয়লার এবং ফায়ার টিউব বয়লারের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ

    ফায়ার টিউব বয়লার (Fire tube boller)

    ওয়াটার টিউব বয়লার (Water tube boiler)

    ১। অপেক্ষাকৃত মন্থর গতিতে স্টিম উৎপন্ন করে।

    ১। অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে স্টিম উৎপন্ন করে।

    ২। স্টিম উৎপাদন হার মন্থর বলে বৃহদাকার প্লান্টের জন্য সুবিধাজনক নয়।

    ২। স্টিম উৎপাদন হার দ্রুত বলে বৃহদাকার প্লান্টের জন্য সুবিধাজনক।

    ৩। সর্বোচ্চ 25 kg/cm2 চাপে স্টিম উৎপন্ন করে।

    ৩। 12 kg/cm2 বা উচ্চ চাপে স্টিম উৎপাদন করতে সক্ষম।

    8। এ বয়লারের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বেশি জায়গার প্রয়োজন।

    ৪। অপেক্ষাকৃত কম জায়গার প্রয়োজন।

    ৯। ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট কি? ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্টের উদ্দেশ লিখ।

    উত্তরঃ ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্টঃ

    বয়লারে পানি দেয়ার পূর্বে এর থেকে অপদ্রব্য দূর করে পানিকে পরিশোধন করা হয়, এ প্রক্রিয়াকে ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট বলে।

    ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্টের উদ্দেশঃ

            পানিকে উত্তপ্ত করার ফলে জ্বালানি সাশ্রয় হয়।

              বয়লারের ধাতব অংশ ক্ষয়কারী পদার্থ পানিতে দ্রবীভূত হয়ে গ্যাস হিসেবে দূর হয়।

              স্কেল উথপন্নকারী লবনসমূহকে বয়লারে প্রবেশের পূর্বেই ওয়াটার থেকে পৃথক করা।

    ১০। সেইফটি ভাল্ব কি? সেইফটি ভাল্বের ব্যবহার লিখ।

    উত্তরঃ সেইফটি ভাল্বঃ

    বয়লারের মধ্যে স্টিমের (বাষ্প) অতিরিক্ত চাপকে যে ভাল্বের মাধ্যমে বের করা হয়, তাকে সেইফটি ভাল্ব বলে।

    সেইফটি ভাল্বের ব্যবহার:

    এটি অটোমেটিক বা সয়ংক্রিয় উপায়ে অতিরিক্ত চাপকে বের করে দিতে পারে ও বয়লারকে নিরাপদ সীমার মধ্যে কার্যকর রাখতে পারে। একটি বয়লারে দুইটি সেইফটি ভাল্ব রাখা হয় যাতে একটি নষ্ট হয়ে গেলে অন্যটি দিয়ে কাজ চালানো যায়।

    .

    ❤️ আপনারা সবাই

    👍Like,

    👌Comment,

    🧭Share- করে আমাদের সাথেই থাকুন।

    .

    Join Group:

    https://www.facebook.com/groups/1039579966538930/

    https://www.facebook.com/groups/httpswww.youtube.comtuhinacademy/

    Email Address: mechcontent.duet@gmail.com

    WhatsApp: https://wa.me/message/NDXW4XEZ5GATF1

    Follow: Tuhin Engineering Academy

    Telegram Larges group for study :

    https://t.me/mechcontentMC



  • 0 Comments:

    MechContent

    Click on the link (MC) next to about our online class.

    MC

    ADDRESS

    Sardagong-1346, Gobindbari, Gazipur Sadar

    EMAIL

    mechcontent.duet@gmail.com
    abutuhin.duet@gmail.com

    TELEPHONE

    +880 9696 082 630
    +880 01601 082 630

    MOBILE

    01601 082 630
    01601 08 26 30